ভারতীয় সেনার দমচাড়া জবাবে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস! পহেলগাঁওয়ে নৃশংস জঙ্গি হামলার কঠোর প্রতিশোধ হিসেবে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী চালিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। মাত্র ২৫ মিনিটের এই অভিযানে স্থল, বায়ু ও নৌসেনার সমন্বিত শক্তিতে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ২৪টি নিখুঁত হামলা চালানো হয়। ফলাফল? প্রায় ৭০ জঙ্গি নিহত, যার মধ্যে জয়েশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবারের দশ সদস্যও রয়েছেন।
এই অভিযানের বিশেষত্ব ছিল এর কৌশল। ভারতীয় সেনা নিজেদের এয়ারস্পেস থেকেই এই হামলা চালিয়েছে, পুরোপুরি দূরপাল্লার অত্যাধুনিক অস্ত্রের জোরে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বা এয়ারস্ট্রাইকের পুরনো পদ্ধতি থেকে সরে এসে এবার ভারত বেছে নিয়েছে উন্নত প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র আর স্মার্ট বোমা। এর মধ্যে ছিল ‘স্ক্যাল্প ক্রুজ মিসাইল’, যার ডাকনাম ‘স্টর্ম শ্যাডো’। এই ক্ষেপণাস্ত্র ২৫০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে লক্ষ্যবস্তুর গভীরে ঢুকে ধ্বংসলীলা চালাতে পারে। সঙ্গে ছিল ‘হ্যামার বোমা’, একটি স্মার্ট বোমা, যার পুরো নাম হাইলি অ্যাজাইল মডিউলার মিউনিটন এক্সটেন্ডেড রেঞ্জ। বাঙ্কার থেকে বহুতল ভবন, সব ধ্বংস করতে সক্ষম এই বোমা লস্কর-ই-তৈবা ও জয়েশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটিগুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এর রেঞ্জ ৫০ থেকে ৭০ কিলোমিটার, কিন্তু নিখুঁত নিশানায় আঘাত হানার ক্ষমতা অতুলনীয়।
এছাড়াও, আকাশে নজরদারির দায়িত্বে ছিল কামিকাজে ড্রোন। এই ড্রোনগুলো শুধু লক্ষ্য চিহ্নিত করেনি, নিখুঁত হামলা নিশ্চিত করতেও সাহায্য করেছে। ভারতীয় সেনার এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল একটাই—জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করা, কিন্তু সাধারণ মানুষের কোনো ক্ষতি যেন না হয়। তাই বেছে নেওয়া হয়েছিল এমন অস্ত্র, যা শুধু লক্ষ্যেই আঘাত হানে, অন্য কোথাও নয়।
‘অপারেশন সিঁদুর’ শুধু ভারতের সামরিক শক্তির প্রমাণই দেয়নি, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ আর কৌশলগত দক্ষতার এক নতুন অধ্যায়ও রচনা করেছে। এই অভিযান জানান দিয়েছে, ভারত যেকোনো হুমকির জবাব দিতে প্রস্তুত, তা যত দূরেই হোক না কেন!

