রিষড়া, ২৮ এপ্রিল: পাকিস্তান সেনার হাতে আটক বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউয়ের স্ত্রী রজনী সাউ সোমবার স্বামীর প্রতি অটুট আস্থা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “১৭ বছর ধরে সীমান্তে দায়িত্ব পালন করা একজন জওয়ান কীভাবে নিজের সীমানা না জানবেন? কী করা উচিত, কী নয়, তা তিনি বুঝবেন না? আমি এটা বিশ্বাস করি না।” তাঁর দাবি, ঘটনার পেছনে কিছু তথ্য গোপন করা হচ্ছে। এদিন পাঁচ সদস্যের পরিবার ও আত্মীয়দের নিয়ে পাঠানকোটের উদ্দেশে বিমানে রওনা হন রজনী।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আবেগপ্রবণ রজনী বলেন, “ঘটনার পর বিএসএফের তরফে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। আমার স্বামীর বন্ধুদের মাধ্যমে খবর পেয়েছি। পরে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ এলেও কোনো স্পষ্ট তথ্য দেননি।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “একজন জওয়ানের পরিবারকে কেন সব জানানো হবে না?” গত ছয় দিনেও স্বামীর অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানতে না পারার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমার ছোট ছেলে প্রতিদিন বাবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে। ছয় দিন ধরে সে বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। কেউ কি জানতে চেয়েছে, আমি তাকে কীভাবে সামলাচ্ছি?” স্বামীর প্রত্যাবর্তনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “আগে আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দিন, তারপর সব কথা শুনব।”
রিষড়া পুরসভার চেয়ারম্যান বিজয় মিশ্র রজনী ও তাঁর পরিবারকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন। তিনি বলেন, “রজনী দেবীর এই যাত্রা সফল হোক, এটাই কামনা।” বিমানবন্দরে বিএসএফ কর্তৃপক্ষের উপস্থিতি দেখা গেলেও তাঁরা সঙ্গে গেছেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে পাঠানকোটে ‘বেআইনিভাবে’ সীমান্ত পেরোনোর অভিযোগে পাকিস্তান সেনা পূর্ণম সাউকে আটক করে। এরপর থেকে রিষড়ার সাউ ভিলায় উদ্বেগের পরিবেশ। রজনী পাঠানকোটে গিয়ে স্বামীর ব্যাটালিয়ানের কম্যান্ডিং অফিসারের সঙ্গে দেখা করবেন। সন্তোষজনক উত্তর না পেলে তিনি দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দরবারে ধর্না দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। শারীরিক জটিলতা সত্ত্বেও তাঁর এই সংকল্প স্বামীর প্রতি তাঁর অটল ভরসা ও ন্যায়ের জন্য লড়াইয়ের প্রতিফলন।
বিএসএফ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, “আমরা বিষয়টি দেখছি। কথাবার্তা চলছে।” তবে পরিবারের অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত কোনো সুস্পষ্ট তথ্য দেওয়া হয়নি।

