পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক নারকীয় জঙ্গি হামলার ঘটনা ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে গভীর সংকট সৃষ্টি করেছে। এই হামলার জেরে দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা চরমে পৌঁছেছে। ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলে তীব্র সমালোচনা করেছে। দিল্লি থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে যে নিরীহ নাগরিকদের উপর এই হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। এই হুমকির পর ইসলামাবাদে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পাকিস্তান ধরে নিয়েছে যে ভারত সামরিক হামলার পরিকল্পনা করছে। এই আশঙ্কা প্রকাশ পেয়েছে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা মহম্মদ আসিফের বক্তব্যে।
সোমবার এক সংবাদসংস্থার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন যে ভারতের সামরিক হামলা এখন অনিবার্য হয়ে উঠেছে। তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তান তাদের সামরিক বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, ভারতের সম্ভাব্য আক্রমণের বিষয়ে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে সতর্ক করা হয়েছে এবং তারা হাই অ্যালার্টে রয়েছে। শাহবাজ শরিফ সরকারের এই মন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন যে পাকিস্তান কেবল অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে পড়লেই পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে। এই বক্তব্য একদিকে ভারতকে সতর্ক করার চেষ্টা, অন্যদিকে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহারে সংযমী অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়। তবে এটি উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট যে ইসলামাবাদ ভারতের সম্ভাব্য হামলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সামরিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক রাখা হয়েছে এবং কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই প্রস্তুতির মধ্যে সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, সীমান্তে নজরদারি জোরদার করা এবং সম্ভাব্য আক্রমণ মোকাবিলার পরিকল্পনা থাকতে পারে। পাকিস্তান যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকার কথা বললেও, পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে চরম পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেছে।
ভারতের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সামরিক পদক্ষেপের ঘোষণা আসেনি। তবে দিল্লির অবস্থান কঠোর। পহেলগাঁও হামলার জন্য দায়ীদের ছাড় দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট করা হয়েছে। অতীতে উরি এবং পুলওয়ামা হামলার পর ভারতের সার্জিকাল স্ট্রাইক এবং বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক পাকিস্তানের জন্য সতর্কতার নজির।
পহেলগাঁও হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পাকিস্তানের সামরিক প্রস্তুতি এবং ভারতের কঠোর বার্তা পরিস্থিতিকে জটিল করছে। সংঘাত এড়াতে কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা প্রয়োজন। তবে বর্তমানে উভয় দেশের সামরিক সতর্কতা এবং কঠোর অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।

