পবিত্র রমজান মাসের সমাপ্তির সাথে সাথে বিশ্বজুড়ে মুসলিমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন একটি পাতলা চাঁদের প্রতীক্ষায়—যা ঈদ-উল-ফিতরের সূচনার প্রতীক। আজ, ২৯ মার্চ, ২০২৫ তারিখে, সৌদি আরব আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে যে ঈদের চাঁদ দেখা গেছে। এর ফলে শাওয়াল মাসের শুরু নিশ্চিত হয়েছে। সৌদি সুপ্রিম কোর্টের এই বহুল প্রতীক্ষিত ঘোষণা রাজ্যে এবং অন্যান্য মুসলিমপ্রধান দেশগুলোতে উৎসবের আলো জ্বালিয়ে দিয়েছে।
“সৌদি আরবে ঈদের চাঁদ দেখা গেছে”—এই বাক্যটি ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমে ঝড় তুলেছে। লাখো মানুষ আগামীকাল, রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৫ তারিখে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আসুন, এই তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্তের বিস্তারিত জানি এবং এটি বিশ্বের মুসলিমদের জন্য কী বোঝায় তা দেখি।
সৌদি আরব শাওয়ালের চাঁদ দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করলো
রমজান ১৪৪৬ হিজরির ২৯তম রাতে, সৌদি আরবের সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শাওয়ালের চাঁদ দেখার খবর পেয়েছে। ইসলামি ঐতিহ্য অনুসারে, চাঁদ দেখার পর বর্তমান মাসের সমাপ্তি ঘটে এবং নতুন মাস শুরু হয়—যা ঈদ-উল-ফিতর বা রোজা ভাঙার উৎসবের সূচনা করে।
সৌদি আরবের এই আনুষ্ঠানিক বিবৃতি শুধু আগামীকাল ঈদ নিশ্চিত করেনি, বরং উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশ যেমন সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন এবং কুয়েতের জন্যও একটি পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছে। এই দেশগুলো প্রায়শই চাঁদ দেখার ব্যাপারে সৌদি আরবের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে।
এই ঘোষণা ধর্মীয় দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। চাঁদ দেখা একটি গভীর আধ্যাত্মিক অনুশীলন, যা রোজার সমাপ্তি এবং আনন্দময় উৎসবের শুরুর মধ্যে সেতুবন্ধন করে।
চাঁদ দেখার পর মুসলিমরা ঈদের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেয়
সৌদি আরবে ঈদের চাঁদ দেখার মুহূর্ত থেকেই প্রস্তুতি ও উৎসবের ঢেউ শুরু হয়। এখানে দেখে নেওয়া যাক কীভাবে সৌদি রাজ্য এবং আশেপাশের অঞ্চলগুলো জীবন্ত হয়ে ওঠে:
- বাজারে প্রাণের ছোঁয়া: পরিবারগুলো রাতভর বাজারে ভিড় করে নতুন জামাকাপড়, মিষ্টি এবং উপহার কিনতে।
- মসজিদে বড় আয়োজন: সূর্যোদয়ের সময় বিশেষ ঈদের নামাজের জন্য মসজিদগুলো প্রস্তুত হয়।
- দান ও জাকাতুল ফিতর: ঈদের নামাজের আগে গরিবদের জন্য বাধ্যতামূলক দান দেওয়া হয়, যাতে সবাই উৎসবে অংশ নিতে পারে।
- সম্প্রদায়ের উষ্ণতা: রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর সাজানো হয়, এবং সম্মিলিত ভোজের পরিকল্পনা করা হয়।
সৌদি আরবে এই চাঁদ দেখা শুধু একটি ধর্মীয় ঘটনা নয়—এটি একটি সাংস্কৃতিক উৎসব। আতশবাজি, রাস্তার মেলা এবং পারিবারিক পুনর্মিলন মানুষকে একত্রে আনন্দে বাঁধে।
ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের কী অবস্থা?
সৌদি আরব চাঁদ দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও, বাংলাদেশ এবং ভারত, পাকিস্তানের মতো দেশগুলো তাদের নিজস্ব চাঁদ দেখার কমিটির ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশ জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি আজ রাতে বৈঠক করে নিশ্চিত করবে যে ঈদ আগামীকাল, রবিবার, ৩০ মার্চ না কি পরশু, সোমবার, ৩১ মার্চ পালিত হবে।
উদযাপনের তারিখে এই ভিন্নতা স্থানীয় সংস্কৃতির একটি আকর্ষণীয় দিক তুলে ধরে এবং মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বৈচিত্র্য প্রকাশ করে।

