Hot News
- Advertisement -
Ad imageAd image

দেগঙ্গায় তৃণমূল নেতা রবিউল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ


উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ রবিউল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দা এবং তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের তরফে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগগুলি অত্যন্ত গুরুতর এবং ক্ষমতার অপব্যবহার, আর্থিক অনিয়ম এবং প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। এই প্রতিবেদনে অভিযোগগুলির বিস্তারিত বিবরণ এবং স্থানীয় জনগণের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হল।

  • অবৈধ মাটি কাটা ও বিক্রি
    হাঁসিয়া গ্রাম থেকে প্রায় ১০০ বিঘা জমির মাটি জোরপূর্বক কেটে ভাটা এবং রেল লাইনের কাজে বিক্রি করা হয়েছে। এই কার্যকলাপে স্থানীয় জমির মালিকদের সম্মতি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

  • ভেড়ি ও ভাটা থেকে কাটমানি
    গত ৯ বছর ধরে হাঁসিয়া গ্রামের ২৭০ বিঘা ভেড়ি থেকে প্রতি বিঘায় ৪০০০ টাকা এবং দুটি ভাটা (৫৪ বিঘা) থেকে প্রতি বিঘায় ৩০০০ টাকা কাটমানি হিসেবে আদায় করা হয়েছে। এই অর্থ সরাসরি রবিউল বিশ্বাসের নিয়ন্ত্রণে সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

  • সরকারি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অপব্যবহার
    হাঁসিয়া গ্রামে ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বর্তমানে মুরগি চাষের খামার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি সম্পদের চরম অপব্যবহার।

  • টেন্ডারে একচেটিয়া আধিপত্য
    রবিউল বিশ্বাস তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার ভাই জিয়াউল বিশ্বাসের মাধ্যমে দেগঙ্গা ১ নং অঞ্চল এবং বি.ডি.ও অফিসের প্রায় ৯০ শতাংশ টেন্ডারের কাজ নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন।

  • সরকারি পাট্টার নামে প্রতারণা
    সরকারি পাট্টা দেওয়ার নামে এবং একজনের জমি অন্যের নামে রেজিস্ট্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।

  • পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পে প্রতারণা
    হাঁসিয়া গ্রামে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পে রবিউল এবং তার পরিবারের ৮ জন সদস্য প্রকৃত জমির মালিকদের প্রতারিত করে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।


এই প্রসঙ্গে ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন


স্থানীয় জনগণ ও তৃণমূল কর্মীদের প্রতিক্রিয়া


স্থানীয় বাসিন্দা এবং তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা এই দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষুব্ধ। তারা রবিউল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কঠোর বিচার দাবি করেছেন। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, এই ধরনের কার্যকলাপের ফলে এলাকার উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে এবং সরকারি সম্পদের অপচয় হচ্ছে। তৃণমূলের কর্মীরা মনে করছেন, এই ঘটনা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে এবং অবিলম্বে দলীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।


প্রশাসন ও দলের ভূমিকা


এই গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের উচ্চ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন যে, এই অভিযোগগুলির সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বের কাছে এই ঘটনা দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলেছে।

রবিউল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলি দেগঙ্গার রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। স্থানীয় জনগণ এবং দলীয় কর্মীদের দাবি, এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা হোক। প্রশাসন ও তৃণমূল কংগ্রেসের পরবর্তী পদক্ষেপ এই অঞ্চলের উন্নয়ন এবং দলের বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।

আমাদের নিউজলেটার জন্য সাইন আপ করুন